মুভির নাম :- দেবী
এইখানে মুভির একটা রিভিউ তুলে ধরা হয়রছে ।
মুভিটা সম্পর্কে একটা ধারণা দেয়ার জন্য । রিভিউটা পড়তে থাকুন ততক্ষনে অটোমেটিক ভাবে আপনাকে ডাওনলোড পেজে নিয়ে যাবে
_____________________________________________
এই রিভিউ লিখার আগে আমি গ্রুপ গুলোতে এই মুভি সম্পর্কে ইতিপূর্বে লিখা অনেকগুলো রিভিউ এবং তার কমেন্ট পড়ে যা বুঝলাম, এই মুভির ফিনিশিং টা অনেকেই ক্যাচ করতে পারেননি। একমাত্র লেখক ছাড়া কেউ তার মনের অব্যাক্ত কথাটি প্রকাশ করতে পারবেন না এটাই স্বাভাবিক। হুমায়ূন স্যার নিজে পরিচালনা করলে কিছুটা ফিনিশিং অন্যরকম হতো। কিন্তু পরিচালক Anam Biswas বোধকরি কম সফল হননি এ ক্ষেত্রে। তাই আমি ফিনিশিং মিষ্ট্রি আমার ধারনায় রিভিউয়ের শেষে ডিজক্লোজ করবো।
বাংলা মুভির পরিচালনা এত সুন্দর হতে পারে সেটা ভাবতেই অসম্ভব ভালো লাগে। ☺ অজ্ঞাতনামা, আয়নাবাজি সহ বেশ কিছু মুভি দেখে বাংলা সিনেমার প্রতি বেশ আগ্রহ জন্মাচ্ছে। সে আগ্রহ থেকে আজ একজনের রিভিউ পড়ে এই সিনেমাটি দেখা... কি বলবো...!!! অনম বিশ্বাসের ডিরেকশন এত ভালো, সুনিপুণ সেটা এই মুভি দেখে বুঝলাম। উফফফ..!! মুভির প্রতিটা সেকশন ই হোক সেটা সিনেমাটোগ্রাফি, ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক, গানগুলো, কাষ্টিং, মেকআপ সবকিছুই ইন্টারন্যাশনাল স্ট্যান্ডার্ড লেভেলের মনে হয়েছে আমার কাছে।
চঞ্চল চৌধুরীকে নিয়ে কি বলবো...!!! জেনুইন ট্যালেন্ট লোকটা। যে চরিত্রই দেয়া হবে, শতভাগ ফুটিয়ে তুলবেন তিনি। দ্বিধা ছিলো আমার কল্পনায় আকা মিসির আলীর চরিত্র উনাকে কতটুকু মানাবে? কিন্তু উনি ছাড়া এই চরিত্র আর কেউ করতে পারবেনা এটা আমি নিশ্চিত করে বলতে পারি। জয়া আহসান কে আমরা বের করতে পারিনি ভালোভাবে, কিন্তু ওপার বাংলা ঠিকিই সঠিক হিরে চিনতে ভুল করেনি। ওপার বাংলায় সুনাম কামানোর পরেই নজরটা বেশী পড়েছে আমাদের। ঠিক তাই, রানুর চরিত্র খুব পার্ফেক্ট ভাবে উনি ফুটিয়েছেন। ঠিক হিন্দুদের দেবীর মতই উনাকে পুরো মুভি জুড়ে লেগেছে। শবনম ফারিয়া নিলু চরিত্রে, ইরেষ জাকের সাইকো ক্যারেক্টারে অসাধারণ অভিনয় করেছেন। শুধুমাত্র রানুর হাজবেন্ড চরিত্রে অনিমেষ আইচের পরিবর্তে মোশাররফ করিম অথবা রিয়াজকে নিলে খুবই ভালো লাগতো বলে আমার ধারণা। তবে অনিমেষ আইচও ভালোই করেছেন।
একটা ভুল সবাই করছেন দেখলাম : বইয়ের সাথে মুভিকে মিলাচ্ছেন। এটা খুবই বড় একটা বোকামী। বইয়ের সাথে মুভির মিল কখনোই হবে না। লেখক তার লিখনীতে তার আবেগ গুলো লিখে থাকেন যা আমরা পড়ে আমাদের মস্তিষ্কে সেই চরিত্রতে আমাদের নিজেকে বসিয়ে সেই অনুভূতি গ্রহন করতে পারি, কারো মুখের এক্সপ্রেশন দেখে কিংবা ডায়লগ শুনে সেই অনুভূতি কখনোই আসবে না। পৃথিবীর কোন সিনেমাই যেটা বই থেকে সৃষ্ট সেটা বইয়ের সাথে কম্পেয়ার করলে সিনেমা ভালো মনে হবে না।
কিছুটা স্পয়লার এলার্ট :
প্রকৃতির নিয়ম খুব অদ্ভুত, এর কিছু রহস্য ব্যাখ্যা করা গেলেও কিছু রহস্য প্রকৃতি বেশ গোপনীয়তায় আগলে রাখে। সেই কারনেই রহস্যজনক ভাবে রানুর এক অদ্ভুত ইনটুইশন ( Intuition) বা অন্তর্দৃষ্টির ক্ষমতা থাকে যার দ্বারা সে অজানা তথ্য বা ভবিষ্যৎ বলে দিতে পারে। অদ্ভুত স্বপ্ন দেখে, অদভূতুরে শব্দ, নূপুরের শব্দ শোনে। রানুর স্বামীও কিছুটা অনুভব করতে পারে অতিপ্রাকৃতিক কিছু। সে সব কিছুর ব্যাখ্যা জানার জন্য যায় মিসির আলীর কাছে। মিসির আলীর কাছেও উনার ব্যাখ্যা অনুসারে মেন্টাল ডিজঅর্ডারের এমন অদ্ভুত কেইস প্রথম। রানুর এই ঘটনার ব্যাখ্যা দাড় করানোর জন্য তিনি রানুর মুখে সব ঘটনা শুনে ছুটে যান রানুর গ্রামে যেখানে রানু ছোট থেকে বড় হয়েছে। সেখানে গিয়ে বুঝতে পারেন রানু ছোটবেলায় জালালুদ্দিন নামের এক লোকের কাছে যৌন হয়রানির স্বীকার হয়েছিলো যার কারণে তার তার মস্তিষ্কে হ্যালুসিনেশন সৃষ্টি হয় এবং অদ্ভুত সব জিনিষ দেখে বা শোনে। কিন্তু তার আলৌকিক ইনটুইশনের ক্ষমতার ব্যাখ্যা তিনি খুজে পাননা। রানুর মতে যেখানে তার সাথে যৌন নির্যাতন হয়েছিলো সেখানে একটা দেবীর মূর্তি ছিলো যে দেবীর মূর্তি তার ভিতরে ঢুকে তার মাঝে অতিপ্রাকৃতিক ক্ষমতার উদ্ভব ঘটিয়েছে এবং তাকে বাচিয়েছে। এরই মাঝে রানুর পরিচয় হয় রানুদের বাসার বাড়ীওয়ালার বড় মেয়ে নীলুর সাথে। নীলুর সাথে রানুর বেশ সখ্যতা গড়ে ওঠে। নীলু পছন্দ করে ফেলে ফেসবুকে অদেখা এক ছেলের সাথে। যে পরবর্তীতে নীলুকেই কিডন্যাপ করে কারন সে একজন সাইকো কিলার। নীলু কি পারবে বাচতে..? নাকি রানু তার ক্ষমতায় তাকে বাচাবে..? নাকি সেই সাইকো তাকে কেটে টুকরো টুকরো করবে..?
এক্সট্রিমলি স্পয়লার এলার্ট:
এপর্যায়ে আমি ডিজক্লোজ করবো আমার দৃষ্টিকোণ থেকে মুভিটির রহস্য। যারা মুভিটি দেখেছেন তারাই বুঝবেন।
রানুর এমন ভয় আর ক্ষমতা তার উপর হওয়া ছোটকালের যৌন নির্যাতনের আগে থেকেই। এখানে আসলে অলৌকিক ঘটনাকেই লেখক/পরিচালক জিতিয়েছেন। অনেক আগে রানুদের গ্রামে এক হিন্দু জমিদার পালবাবু মন্দির প্রতিষ্ঠা করে। এই মন্দিরই কাল হলো, সন্তান হয় না মন্দির প্রতিষ্ঠা করার পর। তাই দুজন কুমারী মেয়েদের বলি দেয়। কিন্তু দ্বিতীয় মেয়েটিকে বলি দিতে পারে না, প্রথম বলি দেয়া মেয়েটিই তার ক্ষমতায় সেই দ্বিতীয় মেয়েটিকে বাচিয়ে দেয়। এর পর থেকেই তারা একে অপরের সাথে থাকে। তাই তার অতিপ্রাকৃতিক ক্ষমতায় রানুর সাথে করা সেই যৌন নির্যাতনকারীকে কে মেরে ফেলে। মুভির শেষে রানু মৃত্যু শয্যায় প্রকাশ করে তারা আসলে দুজন যারা একে অপরের সাথে সবসময় থাকে। সে ই প্রথম মেয়েটি যে বলির স্বীকার হয়েছিলো আর রানু যে হতে নিয়েছিলো। যাদের বলি দেবার পর গ্রামবাসী দেখতো তারা দুজন প্রায়ই ঘুরে বেড়াতো। নীলুর সাথে সখ্যতার কারনে সাইকো কিলার ইরেশ যাকেরের হাত থেকে রানুর শরীর থেকে রানু বের হয়ে নীলুর শরীরে প্রবেশ করে নীলুকে বাচায়। যার কারনে নীলুর চেহারাটা রানুর মত হয়ে যায়। রানু মারা যায়। 🙂 ঠিক যেমন প্রথম বলি দেয়া মেয়েটি রানুকে বাচায়। অর্থাৎ ঘটনার আবর্তন।
মুভিটি বায়োষ্কোপ এপে আছে।
ধন্যবাদ সবাইকে... ☺
___________________________________________________এই পেজে ১০ সেকেন্ড অপেক্ষা করুন তাহলে দেখবেন অটোমেটিক ভাবেই ডাওনলোড পেজে চলে যাবে পরে সেখান থেকে আপনার মুভিটি ডাওনলোড করে নিবেন
0 Comments